অবশেষে আর দশটা আর্ন্তজাতিক বেতারের পথ অনুসরণ করলো বিবিসি। একটু দেরিতে হলেও আমাদের বলতে হচ্ছে, “Goodbye BBC from SW, not from the Heart”, মানতে হচ্ছে কঠিন বাস্তবতা। বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয়, শ্রোতানন্দিত আন্তজাতিক বেতার মাধ্যম বিবিসি বাংলা বিভাগও শর্টওয়েভ কে চীরতরে বিদায় জানাচ্ছে। শর্টওয়েভ জগতে এই খবর হতাসার জন্ম দিয়েছে।
কেন বলতে হচ্ছে Goodbye BBC from SW?
৮১ বছর নিরবিচ্ছিন্নভাবে চলার পর কেন বন্ধ হচ্ছে বিবিসি? সাপ্তাহিক ১৫ মিনিটের অনুষ্ঠান থেকে দৈনিক পাঁচটি অধিবেশনও প্রচার করেছে বিবিসি, তাহলে কেন?
শুধুই কি আধুনিকায়ন? না বিবিসি তা বলছে না। আধুনিকায়নের কথা বললেও, শর্টওয়েভ ত্যাগ করার জন্য প্রথাগত উচ্চ ট্রান্সমিটার ব্যায় কে একমাত্র দোষীও করছেনা।
বিবিসি বলছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সমন্বিত চাপই 'তাদের এ কঠিন সিদ্ধান্তের' দিকে নিয়ে গেছে। তারা আরও বলেছে যে ওয়ার্ল্ড সার্ভিসকে আরও আধুনিক, ডিজিটাল ও সুবিন্যস্ত করার কৌশলকে সমর্থন করতে এ পরিকল্পনা সহায়তা করবে।
২৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ড (৩২০ কোটি টাকার বেশি) সঞ্চয় করার জন্য বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের ৩৮২টি পদ শূন্য করার প্রস্তাবও করা হয়েছে । এছাড়াও বার্ষিক মোট ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ড সঞ্চয় করার জন্য সিবিবিসি ও বিবিসি ফোরকেও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অনলাইনে। আর শর্টওয়েভ সম্প্রচার শুধু বাংলা নয়, আরও নয়টি ভাষার পরিশেবা এই বন্ধের তালিকায় রয়েছে।
কোন কোন ভাষা বন্ধ হচ্ছে?
আগেই বলেছি, শুধু বাংলা নয়, এই তালিকায় আছে আরও নয়টা ভাষার সম্প্রচার। শর্টওয়েভ বন্ধ হয়ে যাবে বিবিসির এমন সম্প্রচারিত ভাষাগুলো-
বাংলা,
আরবি,
পার্সিয়ান,
চীনা,
কিরগিজ,
উজবেক,
হিন্দি,
ইন্দোনেশিয়ান,
তামিল ও
উর্দু।
প্রথম থেকেই বলে আসছি বন্ধ হচ্ছে শর্ওয়েভ পরিশেবা। তার মানে বিবিসি কি অন্য মাধ্যমে (যেমন DAB/DAB+ এফএম বা অন্যকিছু) সম্প্রচার অব্যাহত রাখবে?
এক কথায় উত্তর না। তবে বিবিসি কোন ভাষা বিভাগই পুরোপুরি বন্ধ করছেনা, অনেকগুলো ভাষার অনলাইন কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে জানাচ্ছে। বলা বাহুল্য বাংলা সহ অন্যান্য ভাষাও অনলাইন কার্যক্রম অনেক আগে থেকেই চালু আছে। এগুলো বিবিসি বন্ধ করছে না। এখন থেকে অন্যান্য বেতারের মত বিবিসিও আর বেতার থাকছে না হয়ে পড়ছে অনলাইন পোটাল।
কারা থাকছে অনলাইন পরিশেবায়?
বিবিসি বলছে, কোন ভাষা বিভাগই পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে না এবং ওয়ার্ল্ড সার্ভিস বিপদের সময়েও শ্রোতাদের সেবা দিয়ে যাবে এটা নিশ্চিত করতে যে রাশিয়া, ইউক্রেন ও আফগানিস্তানের মতো দেশগুলোর মানুষ বিবিসির নিউজ সার্ভিসগুলো পাবে।
বিবিসি বলছে, কোন ভাষা বিভাগই পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে না এবং ওয়ার্ল্ড সার্ভিস বিপদের সময়েও শ্রোতাদের সেবা দিয়ে যাবে এটা নিশ্চিত করতে যে রাশিয়া, ইউক্রেন ও আফগানিস্তানের মতো দেশগুলোর মানুষ বিবিসির নিউজ সার্ভিসগুলো পাবে।
তবে কারা থাকছেন অনলাইনে?
একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান হলো ‘বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস’, যা, রেডিও, টিভি ও ডিজিটাল মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে এখন সপ্তাহে প্রায় ৩৬৪ মিলিয়ন মানুষের কাছে বিবিসি পৌঁছালেও এর মাত্র অর্ধেক শ্রোতা পান বেতারের স্বাদ, বাকি অর্ধেক অনলাইনে।
এখন থেকে শুধু অনলাইন হয়ে যাছে, চীনা, গুজরাটি, ইন্দোনেশিয়ান, পিজিন, ইগবো, ইউরুবা ও উর্দু ভাষা। আগে থেকেই যারা অনলাইনে আছে, তারা অনলাইনেই থাকবে। (এখানে এফএম পরিশেবার কী হবে তা বিস্তারিত বলা হয়নি)
"বিবিসির ভূমিকা বিশ্বব্যাপী কখনোই কম গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সংবাদের জন্য কোটি কোটি মানুষের কাছে এটি বিশ্বস্ত, বিশেষ করে যেখানে সংবাদ কম পৌঁছায়। আমরা সংকটের সময়ে মানুষকে সহায়তা করি। ইংরেজি ও আরও চল্লিশটি ভাষায় শ্রোতাদের কাছে আমরা ভালো সাংবাদিকতা নিয়ে যাবো এবং আমাদের সংবাদের আরও গভীরে গিয়ে আমাদের সাংবাদিকতাকে আরও প্রভাবশালী ও অর্থপূর্ণ করে তুলবো।"
কী আছে বিবিসি’র প্রস্তাবনায়
কর্মী ছাঁটাই, রেডিও পরিশেবা বন্ধ ইত্যাদি বিষয়ে বিবিসি যে প্রস্তাবনা আনছে বা পরিবর্ন করতে যাচ্ছে, সেগুলো নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মী ও ইউনিয়নের সাথে আলোচনা করা হবে বলে বিবিসি জানাচ্ছে। ছাঁটাই বা শর্টওয়েভ বন্ধ করার পাশাপাশি বিবিসি আরও কিছু প্রস্তাব উপস্থাপন করতে যাচ্ছে। যেগুলো-
ক. কিছু সার্ভিস লন্ডন থেকে সরিয়ে দর্শক-শ্রোতাদের নিকটে নিয়ে যাওয়া; যেমন
- থাই সার্ভিসকে লন্ডন থেকে ব্যাংককে,- কোরিয়ান সার্ভিসকে সিউলে,
- বাংলা সার্ভিসকে ঢাকায় এবং
- ফোকাস অন আফ্রিকা টিভি বুলেটিনকে নাইরোবিতে নেয়া হবে।
খ. লন্ডনে চালু করা হবে নতুন একটি চীনা ইউনিট
গ. আফ্রিকা কনটেন্ট হাব করা যারা ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করবে
ঘ. এছাড়াও বিবিসি আরবি ও পার্সিয়ান সার্ভিসের টিভি সম্প্রচার অব্যাহত রাখার পাশাপাশি আরও অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন ও ডকুমেন্টারি তৈরিতে বিনিয়োগ বাড়ানো।
More SW New
বিবিসির সংবাদ পাঠক যদি বলতেন আগামি এত তারিখ হরতাল, জনগণ তা মেনে নিয়ে হরতাল পালন করতো। ফলে বিবিসি পরিবেশিত ফেক নিউজও কখনও প্রশ্নবিদ্ধ হয়নি। এই সংবাদ বিভাগের টুকরো ঘটনা নিয়েই BBC Fun n Facts এর আয়োজন।
Test your knowledge of the Czech Republic and try your luck to get a Radio Prague prize, a monthly call from Radio Czech. Radio Prague disclosed the Quiz of the month on the first day of each month with a single question on the Czech republic. Listeners are allowed to send their answers by the end of the month.